মূল্য সংযোজন করের প্রকারভেদ। মূল্য সংযোজন করের সুবিধা

 মূল্য সংযোজন কর চার প্রকার যথা :


১। মূল্য সংযোজন কর (VAT) 

২। টার্নওভার কর (Turn over Tax)

৩।সম্পূরক কর(Supplementary duty)

৪।অগ্রিম কর(advanced duty)


১।মূল্য সংযোজন কর (VAT): উৎপাদনকারি, সেবাপ্রদানকারি, বা আমদানি কারক যাদের বার্ষিক বিক্রয় ৩ কোটি টাকা বা তার অধিক তারা মূল্য সংযোজনের উপর ১৫% হারে মূসক বা VAT প্রদান করবে।


২। টার্নওভার কর (Turn over Tax): যে সব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার (বিক্রয়) ৫০ লক্ষ টাকা হতে ৩ কোটি টাকার কম তারা মূসক এর পরিবর্তে ৪% হারে টার্নওভার কর প্রদান করবে।[ধারা-৬৩]

৩। সম্পূরক কর (Supplimentary Duty) :সরকার কিছু বিলাস সামগ্রীর আমদানি ও ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে এসব পণ্যের উপর মূসক ছাড়াও অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক ধার্য করে অবশ্য বিভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্কের হারও ভিন্ন ভিন্ন হয় এই হার ১০% থেকে ৫০০% পর্যন্ত । [ধারা-৫৫]


৪।অগ্রিম কর ব্যবস্থা (Advanced duty) : মূল্য সংযোজন কর আইন-২০১২ অনুযায়ী আগাম করের বিধান রাখা হয়েছে। ৩১(২) ধারায় বলা হয়েছে করযোগ্য আমদানি মূল্যের ৪% হারে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ৫% হারে আগাম কর প্রদেয় হবে অর্থাৎ আমদানি পর্যায়ে একই ভিত্তির উপর ভ্যাট ও আগাম ভ্যাট আরোপ করতে হবে। 

Advanced Tax = (Assessable value + Custom duty + Supplementary duty + Regulatory Duty) X Rate of Advance Tax @4%.) [ধারা- ৩১ (২)] 


আরও পড়ুনঃ

পণ্য ও সেবার পার্থক্য


মূল্য সংযোজন করের সুবিধা *

Advantages of VAT


পরোক্ষ কর হিসেবে মূসকের সুবিধা অনেক। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও করের ভিত্তি সম্প্রসারণে এর ভূমিকা অপরিসীম। নিম্নে এর সুবিধা

উল্লেখ করা হলো :


(ক) সরকারের দিক থেকে সুবিধা (Advantage of VAT to Govt.) :


১। স্বচ্ছতা বৃদ্ধি (Increase of Transferency) : মূল্য সংযোজন কর প্রচলিত অন্যান্য করের তুলনায় অধিক স্বচ্ছ (Transparent)। কারণ এই ব্যবস্থার মূসক দাতা নিজ স্বার্থেই দলিল ও প্রমাণপত্র সংরক্ষণ করে থাকে ।


২। জবাবদিহিতা বৃদ্ধি (Increase of Accountability) ঃ মূসক এর আওতায় উপকরণ কর রেয়াতের জন্য কর কর্তৃপক্ষ প্রতি


পরীক্ষা (Cross— Checking) এর ব্যবস্থা করতে পারে। ফলে স্বচ্ছলতা ও জবাবদিহিতা বাড়ে এবং রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পায়। ৩। উৎসাহ বৃদ্ধি (Increase of inspiration) : বাস্তবে মূসক পুনঃপৌনিক করের (Tax on Tax) : বিলোপ ঘটাবে ফলে ... করদাতাগণ স্বেচ্ছায় কর প্রদানে উৎসাহিত হবে।


৪। রাজস্ব বৃদ্ধি (Increase of Ravenue) : মূসক বা ভ্যাট দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে। বর্তমানে কররাজস্বের সিংহ ভাগ ভ্যাট থেকে আসে। 

৫। মূসক বা ভ্যাট স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর (Self – Enforcing) : মূল্য সংযোজন কর স্বয়ংক্রিয়াকে কার্যকর। হওয়ার ক্ষমতা রাখে। ফলে রাজস্ব আয় বাড়ে।


৬। উৎপাদন বাড়ানো (Increase of production) ঃ দক্ষ মূসক বা ভ্যাট ব্যবস্থা দ্রব্য মূল্য কমাতে, উৎপাদন বাড়াতে, ও অধিক পরিমাণে ভোগ্য পণ্য সরবরাহে সহায়ক । সুষম বণ্টন (Proper distribution) ঃ মূসক বা ভ্যাট ব্যবস্থা করের ভিত্তি প্রসার করা সমজাতীয় সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারে ।


৮। কর ফাঁকি রোধ (Control of tax evasion) মূসক স্তরে স্তরে আরোপ করা হয় এবং উপকরণ কররেয়াত পাওয়া যায় বলে কর সকলে করদানে উৎসাহিত হয় এবং কর ফাঁকি এড়ানো সম্ভব হয় ।


আরও পড়ুনঃ

নেতৃত্ব কাকে বলে?


(খ) করদাতার দিক থেকে সুবিধা (Advantage to tax payer)

১। পরোক্ষ কর (Indirect tax) : এটি একটি পরোক্ষ কর যা করের বোঝা অন্যর উপর চাপানো যায় ।


২। দায় এড়ানো (Avoidance of liability) : এক্ষেত্রে কর দায় এড়ানো সম্ভব হয়। 

৩। নিরপেক্ষতা (Neutrality) : সকলকে সমান হারে কর দিতে হয় ফলে সাম্য ও নিরপেক্ষতা বজায় থাকে। 

৪।সরলতা (Simplicity) : মূল্য সংযোজন কর অত্যন্ত সহজ ও সরল।


৫। মূল্য সংযোজন কর পণ্য ক্রয়ের সময় পরিশোধ করা হয় বলে করদাতা কোন বাড়তি চাপ অনুভব করে না।

 ৬। দ্বৈতকর পরিহার (Avoidance of duel tax) : এ ব্যবস্থায় দ্বৈত কর পরিহার করা সম্ভব হয়।

Comments

Popular posts from this blog

মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে।।Human Resource Management

হস্তান্তর পাওনা বা হস্তান্তর ব্যয় কাকে বলে?

মূলধন কাকে বলে?।। What is capital?