সংগঠন কাকে বলে?what is organisation?

সংগঠন


Organization শব্দটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন- গঠন, পরিচালনা, পাঠ্যক্রম এবং প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি। তাই সংগঠন বলতে একদিকে যেমন সংগঠকের কার্যাবলিকে বুঝায় তেমনি কোনো প্রতিষ্ঠানকেও বুঝায়। সংগঠন হচ্ছে কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য কিছু সংখ্যক মানুষের একটি নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা। (সংগঠনগুলো (মানুষ, উদ্দেশ্য এবং পদ্ধতি এই তিনটি উপাদান নিয়ে গঠিত)। প্রতিটি সংগঠনের ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকে। এই উদ্দেশ্যকে সাধারণত লক্ষ্য হিসেবে প্রকাশ করা হয়। সংগঠনগুলো মানুষের সমন্বয়ে গঠিত হয় এবং সংগঠনের একটি নিয়মতান্ত্রিক কাঠামো রয়েছে যেখানে প্রতিটি সদস্যের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিছু সদস্য হলো ব্যবস্থাপক এবং কিছু সদস্য হলো কর্মী। মূলত আইনগত সত্তা বিহীন সংগঠন হলো একদল ব্যক্তির সাধারণ লক্ষ্য বা পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে গঠিত সহজতম একটি রূপ। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে একজন থেকে কয়েক হাজার ব্যক্তি সম্পৃক্ত থাকতে পারে। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য নির্ধারণের সময় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করতে হয়। এই বিষয়গুলো ব্যক্ত বা অব্যক্ত হতে পারে। অন্যভাবে বলা যায় যে, সংগঠন হলো মানুষের সংঘবদ্ধ কর্ম প্রচেষ্টা। অর্থাৎ এটি এমন একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যকে বাস্তবে রূপদান করা সম্ভব হয় তবে সমাজবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গি এ ব্যাপারে ভিন্নতর। তাদের ধারণা হলো সংগঠন হলো সামাজিক একক, সামাজিক প্রক্রিয়া বা সামাজিক ব্যবস্থা।


 রণ উদ্দেশ্যের সফলতালাভের জন্য বিশেষায়িত অংশগুলোর সমন্বয় সাধন হলো সংগঠন।” (Organization is a harmonious adjustment of specialised parts for the accomplishment of some common purpose or purposes. - Prof. L. H. Honey) অধ্যাপক মিলওয়ার্ড এর মতে, “কর্ম ও কর্মীর মধ্যে সামঞ্জস্যপূর্ণ পারস্পরিক সম্পর্কই হলো সংগঠন।”


প্রখ্যাত মনস্তত্ত্ববিদ এলটন মেয়ো তার বিখ্যাত হথর্ণ গবেষণায় ভিন্নতরভাবে তার মতবাদের ভিত্তি স্থাপন করেন। তার অভিমত

হলো, “মানুষ সামাজিক জীব বিধায় তারা একা একা সঙ্গী সাথী ছাড়া বাস করতে পারে না। তাদের দ্বারা একক প্রচেষ্টার

মাধ্যমে কোনো জটিলতর কার্য সম্পাদন করাও সম্ভব হয় না। তাই নিজ প্রয়োজনে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একত্রে মিলিত হয়ে

সাধারণ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সুসংঘবদ্ধ হয়ে সংগঠন গড়ে তোলে।”


সাংগঠনিক আচরণ


S. P. Robbins and Mary Coulter বলেন, “সংগঠন কাঠামো পদবাচ্যটি দ্বারা সংগঠনের আনুষ্ঠানিক কাঠাगেा - | যোগাযোগ ও কর্তৃত্বের পদ্ধতিকে বুঝায়।” (The term organization structure describes the organization's forma


framework or system of communication and authority.)


অন্যদিকে Schermerhorn-এর বলেন,“সংগঠন কাঠামো বলতে কার্যাবলির পদ্ধতি, সম্পর্কের প্রতিবেদন এবং যোগাযোগে সংযোগ স্থাপনের পদ্ধতিকে বুঝায়।" (Organization structure is a system of tasks, reporting relationships and communication linkages.)


আরও পড়ুন :

উৎপাদন কাকে বলে /


|   প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও দলের কাজের মধ্যে পারস্পরি সম্পর্ক এবং সমন্বয়ের যে আনুষ্ঠানিক রূপরেখা প্রণয়ন করে, তাকে সংগঠন বলে।” (Organization structure is th formal pattern of interactions and co-ordination designed by management to link to tasks of individual and groups in achieving organizational goals.)


উল্লেখিত সংজ্ঞাগুলোর বিশ্লেষণ করে সংগঠন কাঠামোতে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো পরিলক্ষিত হয় > সংগঠন কাঠামো প্রাতিষ্ঠানিক কার্যাবলির একটি সামগ্রিক রূপরেখা। এটি একক কোন শাখা নয় ।


> এতে কর্তৃত্ব ও দায়িত্বের সম্পর্ক দেখানো হয়। যা কার্য সম্পাদনকে সহজতর করে।


>এটি প্রত্যেক ব্যক্তি ও বিভাগের কাজ নির্ধারণ করে এবং

সংগঠন কাঠামো জনশক্তি ও অন্যান্য সম্পদের প্রয়োজন ও বণ্টন নির্দেশ করে। 

পরিশেষে বলা যায়, সম্মিলিতভাবে কাজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যার্জনের জন্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যে কাঠামো (Structure) তৈরি করে এবং এর মাধ্যমে সকল স্তরের কর্মরত ব্যক্তিদের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাকে সংগঠন কাঠামো বলে। এটি শুধুই যান্ত্রিক কাঠামো নয় বরং সংগঠন হলো সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সমন্বয়ে গঠিত একটি মানবিক সংস্থা।

Comments

Popular posts from this blog

মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে।।Human Resource Management

হস্তান্তর পাওনা বা হস্তান্তর ব্যয় কাকে বলে?

মূলধন কাকে বলে?।। What is capital?